রবিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৫

অপরাজিতায় পরাজিত

এই যে, শুনছেন?...... ট্রেনের জানালায় মাথা দিতে নেই।
[কোন সাড়া শব্দ পাওয়া গেল না]
এই যে, আপনাকেই বলছি, শুনছেন?
-হু, শুনছি ... বলুন।
.বলছিলাম, ট্রেনের জানালায় মাথা দিবেন না। কাচ পড়ে গিয়ে বিপদ হতে পারে।

কথাটা বলে মনে মনে ভাবছি, অপরিচিতা কাউকে এতোটা অধিকার নিয়ে কিছু বলা বোধ হয় উচিত হয় নি। উনি কিছু মনে করতে পারেন। কিন্তু, ওনার কোন ভ্রুক্ষেপই নেই যেন। খেয়ালই করলেন না। ট্রেনের জানালায় মাথা দিয়ে দিব্যি তাকিয়ে আছেন বাইরে, অচীন সীমান্তে।

ট্রেনে যাচ্ছি। ট্রেনে খুব যাত্রী ছিলনা। রাতের ট্রেন, জানালার পাশে বসেছি। আর আমার একদম মুখোমুখি জানালার পাশে সেই অপরিচিতা। সমবয়সী বা দু'এক বছর ছোটই হবে।
আমি রুক্ষ সুক্ষ মানুষ। একবারের কথা দু'বার বলা আমার স্বভাবের সাথে যায় না। সহপাঠীরা বলে আমি নাকি একস্ট্রা ভাব নিয়ে চলি। তো একজন অপরিচিতা জানালায় মাথা দিয়ে আছে, থাক! তাতে আমার কি?....... কিন্তু, এবেলায় যেন আমি নিজেকে নিজ স্বভাবের বাক্সতে বন্দী করে রাখতে একদমই পারছিলাম না। বারবার যেন ওনার দিকে নজর চলে যাচ্ছিলো। কোমল কঠিনে মিশ্রিত একজন। যার চোখের দিকে তাকালে মনে হবে সারা পৃথিবীর মায়া যেন একই বিন্দুতে সমাহিত। তার জানালার বাইরে অপলক দৃষ্টি, একদমই যেন ওই কালো ঘুটঘুটে অন্ধকারের জন্য নয়। জীবনানন্দের  ''নাটোরের বনলতা সেন'' , কিংবা শেকসপিয়রের ''কৃষ্ঞবালিকা" এর প্রেমে পড়েছি। হয়তো স্বপ্নদেশে এদের জন্য বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তন্ন তন্ন করে ১০৮ টি নীলপদ্মও নিয়ে এসেছি। কিন্তু না, আমি মেলাতে পারছি না। একদমই পারছি না, একদমই না।

ট্রেন চলছে।  অদ্ভুত এক মাদকতায় যেন সবাইকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে কেউ। জেগে আছি আমি। আর সেই মেয়েটি, যথারীতি জানালায় মাথা দিয়ে।

আচ্ছা, যাবেন কোথায়?..... জিজ্ঞাসা করলাম।
-জানিনা! আপনি?  [প্রথমবার কিছু একটা বলার সুযোগ পেলাম]

সুযোগের সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করলাম। বললাম,  'জানিনা!'

আবার নির্বিকার। কি মেয়ে রে বাবা। এতো আমার চেয়েও রুক্ষ। দেখে ভবিষ্যদ্বাণী করাটা যে নিতান্তই মনের ভুল তা একদম রন্ধ্রে রন্ধ্রে টের পাচ্ছি। বারবার কি অবলীলায় আমার সব চিন্তাগুলোকে ভেঙেচুড়ে দিয়ে যাচ্ছে।........ কিন্তু, আমিও যে দমে যাবার পাত্র না।

আচ্ছা, বাইরে কি দেখছেন?
-স্বভাবজনিত নির্বিকারত্ব, 'কিছু না!'
ও আচ্ছা..... ওই যে বাইরে আলোটা দেখছেন, একবার জ্বলছে আর নিভছে?... দেখছেন কি?
-হু...
ধরুন, ওই আলোটা থেকে কেউ আপনার দিকে এগিয়ে আসছে। আপনার একটু স্পর্শ পাবার জন্য।
[মনোযোগ আমার দিকেই আসছে]

অনেকটা কিন্তু কাছে চলে এসেছে সে। এখন, শুধু আপনার হাত বাড়িয়ে তাকে তুলে নেবার অপেক্ষা। হাত বাড়াবেন না?

[সম্পূর্ন মনোযোগই হয়তো নিতে পেরেছি। কিন্তু, উনি চুপচাপ। জানালা থেকে মাথা সরিয়ে কি যেন ভাবছেন ]

কিন্তু, আপনি তো হাত বাড়ালেন না!
-তারপর কি হল??

এই প্রথমবার মনে হল যে কিছু একটা ওনার কঠিন মনে দাগ কেটে গেছে।

কি আর হবে!...... হয়তো করুন পরিনতি!

আমি তার দু'চোখে অশ্রুর ঝড়ে পড়া দেখলাম। আবার জানালায় মাথা রাখলেন। এবার আর মনোযোগ আকর্ষন করার চেষ্টা করিনি। আমি যে প্রতিনিয়ত খুন হয়ে চলছিলাম ওই খুনী দু'চোখে।

শেষবারের মত জিজ্ঞাসা করলাম, 'নামটা জানতে পারি?'

-অপরাজিতা!

সোমবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৫

ফটোশপ টিউটোরিয়াল ১ - ইন্টারফেস পরিচিতি



ফটোশপের কিছু বেসিক বিষয় নিয়ে লেখার চেষ্টা করব। ফটোশপ নিয়ে এই প্রথম কিছু লিখছি। আগ্রহ থেকেই ফটোশপ শিখা শুরু করি কলেজ জীবনে প্রথম বর্ষে। পিসিতে নেট না থাকায় ফোনে টেক্সট টিউটরিয়াল দেখে শেখা শুরু করি। এখনও শিখছি। এখানে ফটোশপের কিছু বেসিক বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে পোস্ট দেয়ার চেষ্টা করব। কেননা ফটোশপের ব্যাপারে বেসিক ধারনা থাকলে পরে আগ্রহ থেকে অনেক কিছু শিখে ফেলা যায়। তাই একদম বিগেনার লেভেলের পোস্ট করা হবে।

কাজের কথায় আসি। আজ আমরা শুধু ফটোশপের ইন্টারফেসের সাথে পরিচিত হব। আমি Photoshop CS6 ব্যাবহার করছি। তাই এই ভার্শন দিয়েই বুঝানোর চেষ্টা করব। আপনার ফটোশপ পুরনো অথবা নতুন ভার্শনের হলেও বুঝতে তেমন প্রবলেম হবে না আশা করছি।

ফটোশপে ঢুকুন। মেনুবার থেকে File>Open(or ctrl+o) এ ক্লিক করার পর একটা উইন্ডো আসবে সেখান থেকে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত ছবিটি সিলেক্ট করে ওপেন করুন। নিচের মত একটা ইন্টারফেস আসবে।


এরকম একটা স্ক্রিন দেখে হয়ত আপনার প্রথম মাথা ঘুরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু আপনি যখন আস্তে আস্তে এটার সাথে পরিচিত হতে থাকবেন আর বিভিন্ন টুলের কাজ দেখবেন তখন আপনি এটার প্রেমে পড়তে থাকবেন। ফটোশপের ইমেজ এডিটিং পাওয়ার দেখে আপনি অবাক হবেন এটা নিশ্চিত।

আমরা ফটোশপের বার আর পেনেলের সাথে পরিচিত হব। নিচের ছবিতে নামগুলো দেয়া আছে। পরবর্তীতে যখন আমরা এই নাম গুলো নির্দেশ করে কাজ করব তখন এগুলো অনেক কাজে আসবে।



Menu Bar: স্ক্রিনের সবথেকে উপরে যে বার আছে সেটা হচ্ছে মেন্যু বার (ক্ষেত্র বিশেষে Application Bar ও থাকতে পারে তবে সেটা মেন্যু বারের উপরে থাকবে)। মেন্যু বারের বিভিন্ন হেডিং এ ক্লিক করলে আপনি ওই হেডিং এর অন্তর্গত অপশন আর কমান্ড দেখতে পারবেন। যেমন আপনি যদি File এ ক্লিক করেন তবে আপনি সেখানে দেখতে পারবেন New, Open, Save, Close সহ আরো অনেক ফাইল অপশন।


Tool Bar: বাম পাশে যে একটা বার আছে সেটা হচ্ছে টুল বার। এখানে ও অনেক গুলো টুল আছে। ছবিতে কাজ করার জন্য আমার যেসব টুল ব্যাবহার করব তা এই টুল বার থেকে সিলেক্ট করেই করব।





Option Bar: অপশন বার সরাসরি টুল বারের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এটি মেন্যু বারের নিচেই থাকে। আমরা যে টুল সিলেক্ট করব তার বিভিন্ন অপশন পাব এই বারে।


Panels: ডান পাশে আছে প্যানেল কলাম। এগুলো অপশন আর কমান্ডের উপর পূর্ণ কন্ট্রোল দেয়। লেয়ার ডকুমেন্টেশন, কালার নির্বাচন, টেক্সট নিয়ে কাজ করা, ডকুমেন্টের তথ্য, বিভিন্ন ইফেক্ট সহ আরো অনেক কাজে এই প্যানেলগুলো ব্যাবহার করা হয়।


উইন্ডো মেন্যু থেকে সহজেই প্যানেল নির্বাচন করা যায়।


Document Window/Photo: ফটোশপের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ যেখানে ছবি ওপেন থাকবে আর এডিটিং করব। এই উইন্ডোর উপরে ছবির ব্যাপারে কিছু তথ্য দেয় সেগুলো হল ছবির নাম, জুম লেভেল, কালার মোড আর বিট ডেপথ।




আজ আর বেশি লিখব না। নতুন লিখছি। ঠিকমত গুছিয়ে লিখতে পারি নাই হয়ত। ভুল গুলো ধরিয়ে দিলে শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করব। খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী পোস্ট লিখব।

ধন্যবাদ।

শুক্রবার, ২ অক্টোবর, ২০১৫

ওয়াইফাই হটস্পট, আমাদের পোড়া কপাল এবং দাওয়াই



আমরা কম বেশি সবাই ওয়াইফাই হটস্পট ব্যবহার করে র্পিসি থেকে ফোন এ বা অন্য পিসিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু উইন্ডোজ ব্যবহারকারিদের জন্য দুঃখের বিষয় হল আমরা সবাই কানেক্টিফাই এর পিছনে ছুটি। কিন্তু কানেক্টিফাই এর মত ফালতু এপ আমি কমই দেখেছি। কারণ এর পেচ বা মড সবই ঝামেলা করে। কাজ করে না। কাজ করলেও কয়েক দিন পর আপডেট নেয় অটোমেটিক। আর কোনো সতর্ক ব্যবহারকারি অটো আপডেট বন্ধ করে দিলে বলে হয় আপডেট কর না হলে তোমার সাথে আড়ি।

দাওয়াইঃ

মামাকে অনেক গুতানোর পর সে ‘১৬০ওয়াই-ফাই’ নামক দাওয়াই দিল। কিছুই করি নাই। শুধু ডাউনলোড দিসি আর ইনস্টল দিসি। কসম খেয়ে বলছি, আর কিছুই করি নাই। আর যদি কারো ড্রাইভারে কোনো সমস্যা থাকে তা হলেও সে ড্রাইভার খুঁজে দিবে। কারো যদি এর সম্পর্কে আরো কিছু জানার থাকে তবে ওর ওয়েব সাইট ১৬০ওয়াইফাই তো আছেই।


ফিচারঃ
  • পুরাই মাগনা। মানে এপ ইন্সটল দেওয়ার আগে বা পরে কোনো ডলার ডলার নাই। কোনো অ্যাড নাই। পুরা এপটাই ব্যবহার করা যায়।
  • ওয়্যারলেস এডাপটার ড্রাইভার ঠিক থাকলে '১ ক্লিক' ফিচার কি জিনিস তা এই এপে বোঝা যায়।
  • কম্পিউটারকে একটি ওয়াইফাই ওয়্যারলেস হটস্পট পয়েন্ট বানিয়ে দেয়।
  • সকল ওয়াইফাই যুক্ত মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ট্যাবলেট পিসি ইত্যাদি এর সাথে ইন্টারনেট ভাগ করা যায়।
  • স্ট্যান্ডার্ড ডব্লিউপিএ২ পিএসকে পাসওয়ার্ড ওয়াইফাই হটস্পট কে সুরক্ষিত রাখে।
  • ডাটার অপচয় কমায় এবং টাকা বাঁচায়।
  • নেটওয়্যার্কের স্পিড ঠিক করে দেওয়া যায়।
  • উইন্ডোজ ১০, ৮.১, ৮, ৭, এক্সপি, ভিসতা সবার সাথেই ভালো কাজ করে।
  • ব্যবহার সহজ আর বেশি গুতাগুতির প্রয়োজন নাই।

ডাউনলোডঃ
এই এপ টি ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন এখানে ।



বিঃদ্রঃ কোনো সমস্যা হলে মন্তব্য করার জন্য লজ্জা পাওয়ার কোনো কারন নাই।


বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর, ২০১৫

সমুদ্রের গান : Song of the Sea থেকে

আমার অতি প্রিয় মুভি Song of the sea. মুভিটার সবচেয়ে অসাধারন বিষয়গুলোর মধ্যে হচ্ছে এই গানটা। আইরিশ ভাষার গান (যেহেতু একটা আইরিশ অ্যানিমেশন টিমের তৈরী করা ছবি, কাহিনীটাও আইরিশ রূপকথাকে ঘিরে)। আইরিশ ভাষা আমরা বুঝি না যদিও, কিন্তু লিরিকটা অনেকটা এরকম।
Idir ann is idir as
Idir thuaidh is idir theas
Idir thiar is idir thoir
Idir am is idir áit

Casann sí dhom
Amhrán na farraige
Suaimhneach nó ciúin
Ag cuardú go damanta
Mo ghrá


Idir gaoth is idir tonn
Idir tuilleadh is idir gann
Casann sí dhom
Amhrán na Farraige
Suaimhneach nó ciúin
Ag cuardú go damanta

Idir cósta, idir cléibh
Idir mé is idir mé féin
Tá mé i dtiúin

আরও ভালো ব্যাপার হচ্ছে গানটার ইংরাজি ভার্সনও আছে।


Between the here, Between the now
Between the North, Between the South

Between the West, Between the East
Between the time, Between the place

From the shell
The Song of the Sea
Neither quiet nor calm
Searching for love again,

Mo ghrá (My love)

Between the winds, Between the waves
Between the sands, Between the shores

From the shell
The Song of the Sea
Neither quiet nor calm
Searching for love again,

Between the stones, Between the storms
Between belief, Between the seas

Tá mé i dtiúin (I am in tune)